আজ শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) উদ্দীপন প্রধান কার্যালয় সহ সারা বাংলাদেশের ৯৩৪টি শাখাতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. মিহির কান্তি মজুমদারের সভাপতত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এমেরিটাস চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ শহীদ হোসেন তালুকদার।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ও বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ঝন্টু মেসবাহ উদ্দীন আহম্মদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন নির্বাহী পরিচালক ও সিইও বিদ্যুৎ কুমার বসু।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদ সদস্য মো: মাহবুবুর রহমান, নাহিদ সুলতানা, মো: সাব্বির আহম্মেদ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ ড. গোলাম আহাদ, মিনা সরকার, ড.আফতাব উদ্দীন, ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ, রোকেয়া খাতুন।

পাশাপাশি ১৩টি জোনের জোনাল ব্যবস্থাপক ও রিজিওনাল ব্যবস্থাপক এবং ৯৩৪ টি শাখার ব্যবস্থাপক ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। উদ্দীপনের প্রতিটি শাখাতে দিন ব্যপি ৫১ তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়।

ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানটি। পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন মো: মুরসেলিন, পবিত্র গীতা পাঠ করেন অন্তরা সরকার, পবিত্র বাইবেল পাঠ করেন এলিজাবেথ দাস এবং পবিত্র ত্রিপিটক পাঠ অডিও বাজানো হয়। এরপর রওশন জান্নাত রূশনী ও তার দল জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পরিচালক ও মাঠ পরিচালনা উদ্দীপন মো: সগির হোসেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মো: শহীদ হোসেন তালুকদার বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙে প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে। ২৪ বছরের নাগ পাশ ছিন্ন করে জাতির ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় এক নতুন সূর্যোদয়। প্রভাত সূর্যের রক্তাভা ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সমস্বরে একটি ধ্বনি যেন নতুন বার্তা ছড়িয়ে দেয় জয় বাংলা বাংলার জয়, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল, রক্ত লাল, রক্ত লাল। মহামুক্তির আনন্দ ঘোর এই দিনে এক নতুন উল্লাস জাতিকে প্রাণ সঞ্চার করে সজীবতা এনে দেয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ও বিশেষ অতিথি ঝন্টু মেসবাহ উদ্দীন আহম্মদ বলেন, যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত বাঙালি চোখে আনন্দ অশ্রু আর ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় সামনে। বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের অবশেষে মিলিত হয় জীবনের মোহনায়। বিশ্ব কবির সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা, রূপের তাহার নেইকো শেষ, বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ। বাঙালি যেন খুঁজে পায় তার আপন সত্তাকে।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিদ্যুৎ কুমার বসু বলেন, আদি বাঙালির সাংস্কৃতিক ও আর্থ-সামাজিক জীবন এবং ক্রমবিকাশের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বাঙালির শৌর্য-বীর্য যেন আর একবার ধপ করে জ্বলে উঠে। অবশেষে নয় মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে বাঙালি জাতির জীবনে এলো নতুন প্রভাত। ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সূচিত হল মুক্তিযুদ্ধের অনিবার্য বিজয়। এর মধ্য দিয়ে এলো হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতি এদিন অর্জন করে তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ ধর্ষিতা মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা ধরা দেয় বাঙালির জীবনে। উদ্দীপন সেই দীপ্ত শপথ নিয়ে নিয়ে এগিয়ে চলছে উদ্দীপন এবং এগিয়ে যাবে।উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. মিহির কান্তি মজুমদার সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে বলেন, বাষট্টি, ঊনসত্তর এবং সত্তর শেষ করে একাত্তরে বাঙালি জাতি হিসাব অংক কষতে থাকে। বাঙালি জাতিকে যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার শেকল পরিয়ে রাখা যায় আর সে হিসাব কষে পাকিস্তানিরা। অবশেষে গভীর কালো নিকষ আঁধার থেকে জেগে উঠে হিরন্ময় হাতিয়ার। ৭ মার্চ একাত্তরের বিশাল জনসমুদ্র থেকে যুগের কবি, মহাকাব্যের প্রণেতা বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠ ঘোষণা দেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরো দেব, তবুও এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এই একটি মাত্র উচ্চারণে যেন বাঙালি সত্যিকার দিক-নির্দেশনা পেয়ে যায়। চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে থাকে বাঙালি। মুক্তি পাগল বাংলার দামাল ছেলেরা স্বাধীনতার রক্ত সূর্যকে ছিনিয়ে আনবে বলে একদিন অস্ত্র কাঁধে তুলে নেয়। ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার সবাই শরিক হয়ে থাকে এ লড়াইয়ে। যতই দিন অতিবাহিত হতে থাকে আরো শাণিত হয় প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। লক্ষ্য স্থির রেখে শত্রু হননে দৃঢ়তায় এগিয়ে যায় বীর বাঙালি। ইতোমধ্যেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন স্পষ্ট হয়ে উঠে। প্রতিবেশী ভারতও জড়িয়ে পড়ে বাঙালির ভাগ্য যুদ্ধে। ডিসেম্বর শেষ পর্যায়ে এসে চূড়ান্ত রূপ নেয় এই যুদ্ধের।

তিনি আরো বলেন, উদ্দীপন দেশের আনাচে-কানাচে সবখানে কাজ করে চলেছে ভবিষ্যতকে সুদৃড় করার যুদ্ধ এখনো চলমান এ যুদ্ধে আমাদের বিজয় আনতে হবে। আমাদের বাংলাদেশ কে গড়তে অনেক কাজ করতে হবে সেই কাজের এখই সময়। আমাদেরকে পরিবেশ বাঁচাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।